মোরগ আপনারা নিশ্চয় চেনেন। বন মোরগের কথাও জানেন নিশ্চয়। হয়তো দেখেছেনও অনেকে। আজ আমরা শোনাবো জল মোরগের কথা।
স্থানীয় প্রজাতির জলচর পাখি এরা। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানে বাস করে। শীত মৌসুমে আবার পরিযায়ী হয়েও অনেকে চলে আসে আমাদের দেশে। স্থানীয় প্রজাতির সাক্ষাৎ মেলে শীতেই বেশি। মৌসুমের অন্য সময়েও দেখা মেলে তবে তুলনায় একেবারেই নগণ্য। যত্রতত্র দেখা যাওয়ার নজির খুব বেশি নেই। সবচেয়ে বেশি দেখা মেলে হাওরাঞ্চলে। দেখতে অনেকটাই ডাহুকের মতো। ঠোঁটের গোড়ার লাল বর্ণটা বাদ দিলে ডাহুক মনে হবে যে কারো কাছেই।
এদের বাংলা নাম : ‘জল মোরগ’, ইংরেজি নাম : ‘কমন মুরহেন’ (Common moorhen), বৈজ্ঞানিক নাম : ‘গ্যাললিন্যুলা ক্লোরোপাস’ (Gallinula chloropus), গোত্রের নাম : ‘রাললিদি’। এ পাখি পান পায়রা বা ডাকাব পায়রা নামেও পরিচিত।
এ পাখি লম্বায় ৩০-৩৮ সেন্টিমিটার। ঠোঁটের গোড়া প্রবাল লাল, অগ্রভাগ হলদেটে। মাথা, গলা কালো। পিঠ, ডানা পিঙ্গল। ডানা বুজানো অবস্থায় সাদা ডোরা দেখা যায়। লেজের ওপর কালচে, নিচের দিক সাদার ওপর কালো ছোপ। চোখের তারা লালচে। পা ও পায়ের পাতা সবুজাভ-হলুদ, হাঁটুর ওপর লালবলয়। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।
প্রধান খাবার: ব্যাঙাচি, ছোট মাছ, ঘাস বীজ, কীট পতঙ্গ ইত্যাদি। আমিষ-নিরামিষ সব ধরনের খাবার এদের পছন্দ। বলা যায় সর্বভূক পাখি এরা। প্রজনন সময় মে থেকে আগস্ট। বাসা বাঁধে ঘাস বনের ভেতর অথবা জলের ওপর নুয়েপড়া গাছের ডালে। বাসা বানাতে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে শুকনো চিকন ডালপালা ও শুকনো ঘাস লতা। ডিম পাড়ে ৪-৭টি। ডিম ফুটে ১৮-২২ দিনে।
সূত্র: দৈনিক মানবকণ্ঠ